Pages

Search This Blog

Tuesday, December 28, 2010

নারী কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ প্রবাসী শাহাজান আসুকের প্রসংসনীয় উদ্যোগ

নারী কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ প্রবাসী শাহাজান আসুকের প্রসংসনীয় উদ্যোগ

- অনুজ কািন্ত দাশ


সমাজে নারী শক্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রথমেই নারীদেরকে হতে হবে স্বাবলম্বী ও আত্মোন্নয়নশীল। শিক্ষাক্ষেত্রে যেমন নারীদের উৎসাহিত করছে সরকার, তেমনি কারিগরি প্রশিক্ষণেও নারীদের যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা থাকা প্রয়োজন। সমাজে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের সম-ভাবনা ও সম-বিকাশ বর্ধনের লক্ষ্যে দৃষ্টান্তমূলক কর্মের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন, এমনই উক্তি করেছেন মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের চাঁনভাগ গ্রামের বাসিন্দা আমেরিকা প্রবাসী মোঃ শাহাজান মিয়া আসুক।
দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় বসবাস করলেও দেশ ও দেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন শাহাজান আসুক। তাই সমাজে নারীর প্রতি অগ্রণী ভূমিকা প্রদর্শন করে নারীশক্তিকে জাগ্রত করতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজগ্রামে গড়ে তুলেছেন নারীদের জন্য সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। যেখান থেকে গ্রামের অসহায়, দুঃস্থ, নিপিড়িত নারীরা বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে আত্মনির্ভরশীল হয়ে বর্তমান পুরুষ শাসিত সমাজে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে।
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রদর্শন ও সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন প্রবর্তনের ভিত্তিতে ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে শাহাজান আশুক দেশে ফিরে মৌলভীবাজরের উত্তরভাগ ইউনিয়নের চাঁনভাগ গ্রামের ধামাইপারে (নিজগ্রামে) মায়ের নামে গড়ে তুলেছেন আফতেরাবানু ফ্রি টেইলারিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। প্রথমে ৩০ জন নারীসদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে প্রথম বছরেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি এগিয়ে এসেছে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় ১০/১২ টি গ্রামের নারী উন্নয়নের অগ্রদূত হিসেবে।
প্রতিদিন ৩ সিপ্টে পরিচালিত হয় এ প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ কর্মসূচী। মহিলাদের মধ্যে সেলাই, বুবন ও বুটিক সহ নানা ধরণের প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি প্রতিমাসে নগদ ৫০০ টাকা করে ভাতাও প্রদান করা হয় এসকল প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে। নারী কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ শাহাজান আসুক এ প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে এলাকার মানব কল্যাণ ও নারী উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত রেখেছেন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের। বর্তমানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন তার ছোটভাই মোঃ সোহরাব হোসেন।
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মধ্যে উত্তরভাগ ইউনিয়নের চানভাগ, বড়দল, আয়পুর, মুকুটপুর গ্রাম মুন্সিবাজার ইউনিয়নের মেদিনীমহল, সোনাটিকি, গয়াসপুর, ইন্দেশ্বর চা-বাগান ও ফতেপুর ইউনিয়নের তোলাপুর সহ আরো বিভিন্ন গ্রামের অসংখ্য নারী প্রশিক্ষণার্থীরা এ প্রতিষ্ঠান হতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। প্রশিক্ষণ শেষ করে এরা নিজ নিজ বাড়িতে বসেই সেলাই বুবনের মাধ্যমে সংসারের আয় রোজগারের পাশাপাশি নিজেরা স্বাবলম্বী হতে শিখেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার চাকুরিও করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।
সমাজের নারী বৈষম্য দূর করতে পুরুষদের পাশাপাশি নারী অধিকারের সুষম বন্টন ও প্রবৃদ্ধিকল্পে শাহাজান আসুক যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তার ভুয়সী প্রসংসা করেছেন উত্তরভাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ কবীর মিয়া। এছাড়াও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ ফারুখ মিয়া, মঈন উদ্দিন, বাদল চক্রবর্তী, শাহ্ আরব আলী, শাহ্ জুনাব আলী, যশোদা রঞ্জন দেব, শাহ্ লুৎফুর রহমান, ছমরু মিয়া প্রমূখ ব্যক্তিরা আবতেরাবানু ফ্রি টেনলারিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথা ব্যক্ত করেছেন। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান, মোঃ কবীর মিয়া বলেন, ‘শাহাজাহান আসুক প্রবাসে থেকেও দেশমাতৃকার টানে তিনি জনকল্যাণে তথা নারী কল্যাণে যে ত্যাগী ভূমিকা রেখেছেন তা সত্যিই অতুলনীয়।’ তিনি আরও বলেন, এমনিভাবে যদি দেশের সকল গ্রামের বিত্তশালীরা জনকল্যাণে এগিয়ে আসতেন তাহলে দেশ হতে কবেই বেকারত্ব দূর হয়ে যেতো পাশাপাশি সমাজে নারী অধিকারও প্রতিষ্ঠিত হতো।

Wednesday, May 12, 2010

এসএসসির পর বুটিক হাউসের কাজ শুরু করি- তানভীন সুইটি

তারকার ভিন্ন পেশা:এসএসসির পর বুটিক হাউসের কাজ শুরু করি- তানভীন সুইটি, প্রতিষ্ঠাতা সুইটি বুটিক হাউস 
  আমি ছোটবেলা থেকেই একটু ফ্যাশনেবল। আব্বু যখনই নতুন পোশাক কিনে দিতেন, তখন ভাবতাম এই পোশাকটার ডিজাইন ভালো হয়নি, রংটাও মিলেনি_এসব। তখন থেকেই একটা স্বপ্ন ছিল নিজেই একদিন পোশাকের ডিজাইন করব। নিজের পছন্দমতো পোশাক পরিবারের সবাইকে পরাব, নিজেও পরব।
সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে এসএসসি পরীক্ষার পর যে অবসর সময়টা ছিল তখন ডিজাইনের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। আর এসএসসি পাসের পর বুটিক হাউসের কাজ শুরু করলাম। প্রথম নিজের জন্য এবং পরিবারের জন্য করলেও পরে বন্ধুবান্ধব পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে বেনামেই যাত্রা শুরু করে আমার এই বুটিক হাউসটি। শেষমেশ বন্ধুবান্ধবদের পীড়াপীড়িতে এর নাম দেওয়া হয় সুইটি বুটিক হাউস।
তখন আমি সবেমাত্র মডেলিং শুরু করেছি। টুকটাক কাজ করি। কয়েক মাসের মধ্যেই আমার এই বুটিক হাউসটা বন্ধুবান্ধব এবং অত্দীয়স্বজনের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। প্রতিটি মানুষের প্রতিটি কাজের পেছনেই কোনো না কোনো মহৎ ব্যক্তির অনুপ্রেরণা থাকে। যাকে অনুসরণ করেই মূলত মানুষ সামনের দিকে এগোয়। আমার অভিনয়জীবনের যেমন আইডল আছে। তেমনি আমার বুটিক হাউস গড়ার এবং ফ্যাশন ডিজাইনিং জীবনেও আইডল আছে। বিবি রাসেল, শাহরুখ শাহিদ_এদের কাজ আমার ভালো লাগত। জীবনে প্রথম রোজগার করেছিলাম পাঁচ হাজার টাকা। তখনো এসএসসি পরীক্ষা দিইনি। ফিলিপস কম্পানির ক্যালেন্ডারের মডেল হয়ে ওই টাকা পেয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সেই টাকার অর্ধেকও আম্মুর হাতে দিতে পারিনি। কারণ আমার বন্ধুরা ভীষণ দুষ্টু, ওরা আমাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে অর্ধেকের বেশি টাকা দিয়ে চায়নিজ খেয়েছিল। এতে অবশ্য আমার কোনো দুঃখ নেই। কারণ সেদিন বন্ধুরা মিলে অনেক মজা করেছিলাম। শত চেষ্টা করেও সেদিনটা কি আর ফিরে পাব?
এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়লাম পুরোদমে, থিয়েটার স্কুলে ভর্তি হলাম। থিয়েটারে কাজ করতে শুরু করলাম, সঙ্গে মডেলিং এবং অভিনয়। ব্যস্ততার মাঝেও চালিয়ে যাচ্ছি আমার নিজের হাতেগড়া বুটিক হাউসটি। মূলত ফ্যাশন ডিজাইনটা হলো সময়ের ব্যাপার। সময় নিয়ে ধীরেসুস্থে করতে হয়_কোন সময় কোন ডিজাইনটা মানুষের মনকে আকৃষ্ট করবে, কোন রংটা দিলে ভালো লাগবে ইত্যাদি। চিন্তা করেই ডিজাইন করতে হবে। কিন্তু ইদানীং খুব একটা সময় করতে পারছি না। মাঝেমধ্যে মনে হয়, অভিনয় ও মডেলিং বাদ দিয়ে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়েই থাকি। সময়-সুযোগ কোনোটিই হয় না। তবে ইচ্ছা আছে পুরোদস্তুর ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়ার।